ভাইরাল ছবিটি অনেক আগের, সর্বশেষ ধর্ষণের ঘটনার নয়

সম্প্রতি খাগড়াছড়ির বলপিয়ে আদাম এলাকায় চাকমা সম্প্রদায়ের এক নারীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণীও সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষিত হয়। দুটি ঘটনাই বিভিন্ন স্যোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। খবর দুটি শেয়ার করতে গিয়ে অনেকে একটি ছবি ব্যবহার করে, যেখানে দুই প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের সাথে এক মেয়েকে হেটে যেতে দেখা যাচ্ছে। এটি ২০১২ সালের অন্য একটি ধর্ষণের ঘটনার ছবি।

একজন ফলোায়ারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে Factখুঁজি অনুসন্ধান করে দেখে, ছবিটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ডয়চে ভেলের (DW) আলাপ নামের একটি ব্লগে। ‘বাংলাদেশে আদিবাসীদের দৈনন্দিন জীবনযাপন’ শিরোনামের এই ব্লগে ব্যবহৃত ১৯ ছবির মধ্যে এটি একটি ছবি। ক্যাপশনে বলা হয়, “২১ আগস্ট ২০১২ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সি এই ত্রিপুরা মেয়েটি খাগড়াছড়িতে এক পুলিশ কনস্টেবলের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল৷” ছবিটির কপিরাইট লেখা হয় Sumit Chakma নামের এক ব্যক্তির। 

একই ছবি ডয়চে ভেলে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবার ব্যবহার করে অন্য আরেকটি ব্লগে ফাইল ফটো হিসেবে। “পাহাড়ি নারীর ধর্ষণ ইতিহাসের কষ্টিপাথরে বিচার করতে হবে” শিরোনামে একটি ফিচারধর্মী লেখায় ছবিটি ব্যবহৃত হয়। Factখুঁজির বিশেষজ্ঞ দল নিশ্চিত হয়েছে যে ছবিটি অনেক আগের এবং সদ্য ঘটে যাওয়া ধর্ষনের ঘটনার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, দুটি ধর্ষণের ঘটনার নিউজ ও তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে পুরান ছবিটি শনিবার সকাল থেকে ব্যবহার করা শুরু হয়। Minar Ahmed নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রায় ২০ ঘণ্টা আগে খাগড়াছড়ির ঘটনা নিয়ে তার পোস্টে ছবিটি ব্যবহার করেন। যদিও কয়েক ঘণ্টা পরে তিনি ছবিটি তার পোস্ট থেকে সরিয়ে ফেলেন। 

তবে এরইমধ্যে আরও অনেকে ছবিটি ব্যবহার করা শুরু করেন। পরবর্তীতে পুরান ছবিটি মূলত সিলেটের ঘটনার ক্ষেত্রে বহুলভাবে ব্যবহার করতে দেখা গেছে। শত শত ফেসবুক ব্যবহারকারী বুঝে-না বুঝে তাদের টাইম লাইনে ছবিটি শেয়ার করছে। এদের মধ্যে আছেন সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ এমনকি সাংবাদিকও। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত ধর্ষণকারীদের সাথে ছবিটি শেয়ার হচ্ছে। ফলে তা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

ভাইরাল হওয়া ছবিটি পুরান। বিভ্রান্তি ও অপপ্রচারের উদ্দেশে এটি ছড়ানো হয়েছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.